ট্রাম্প যুগের শুরু, শঙ্কায় ইউক্রেনীয়রা
নিউজ ডেক্স
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jan 20, 2025 ইং
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হলো আজ। ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির চেষ্টার কথা জানালেও ইউক্রেনীয় সেনা ও বেসামরিক নাগরিকরা তাদের যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছেন একটি কঠিন পথ। দেশটির অনেকেই ধারণা করছেন যুদ্ধবিরতি হলেও রাশিয়ান বাহিনীরই জয় হবে।
ট্রাম্পের সহযোগীরা ধারণা করছেন, যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে কয়েক মাস বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।যদিও নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় বলেছিলেন, যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য দ্রুত একটি সমঝোতায় পৌঁছাবেন।
কিছু ইউক্রেনীয়র আশঙ্কা, তিন বছরের নৃশংস যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতির জন্য তাদের ব্যাপক ছাড় দিতে হতে পারে। প্রচুর কিয়েভ সেনা হতাহত হয়েছে, কয়েক মাস ধরে এই যুদ্ধে রাশিয়ার অগ্রগতিও হয়েছে কিন্তু ট্রাম্প এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন অস্ত্রের সরবরাহ বজায় রাখবেন কি না তা স্পষ্ট নয়।
ইউক্রেনের ১১৩তম টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ব্রিগেডের একজন স্ট্রাইক ড্রোন পাইলট জানান, ট্রাম্প সম্পর্কে মন্তব্য করা তার পক্ষে কঠিন।তবে তিনি রাশিয়ার নিক্ষিপ্ত বোমার প্রবাহ কমাতে আরো পশ্চিমা যুদ্ধবিমানের সরবরাহের আশা করেছিলেন।
শত্রু ভোভচানস্ক শহরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যে এলাকাটি ২০২২ সালে কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার দখলে ছিল এবং তারপর ২০২৪ সালে আবার যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ২১ বছর বয়সী এক ইউক্রেনীয় সেনা বলেন,‘শহরটি কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।খুব বেশি কিছু অবশিষ্ট নেই, কেবল একটি কারখানার ধ্বংসাবশেষ।’ একসময় প্রত্যাশিত বিজয়ের দৃশ্য ছিল শহরটিতে কিন্তু এখন ধীরে ধীরে ধুলোয় মিশে গেছে।
আরো এক সেনা জানান, যখন তার মনোবল ভেঙে পড়ে তখন তিনি তার ইউনিটের এক চাচা-ভাতিজা জুটির কথা মনে করার চেষ্টা করেন। যারা রাশিয়ান দখলদারিত্ব থেকে বেঁচে গিয়ে আবার যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন,‘হ্যাঁ, এটা কঠিন, কখনও কখনও বোঝা কঠিন হতে পারে - কিন্তু যারা সেই ভয়াবহতার মধ্য দিয়ে বেঁচে ছিলেন তারা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত।কারণ তারা এখানে কী হচ্ছে বা কী করতে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না।’
ইউক্রেনের শহরগুলোতে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে আজ সোমবারের আবহাওয়া ছিল বিষণ্ণ। কিয়েভের ২৩ বছর বয়সী ছাত্র আন্তন ডুবচাক বলেন, ‘আমি মনে করি তিনি (ট্রাম্প)যুদ্ধ শেষ করতে সাহায্য করতে পারেন, তবে এটি দ্রুত হবে না এবং এটি অবশ্যই আমাদের পক্ষে হবে না। সামনের সারিতে সবকিছুই ভয়ানক হতে যাচ্ছে।’
বিধ্বস্ত দ্বিতীয় শহর খারকিভের সালটিভকা জেলার একজন পেনশনভোগী জানান, তিনি ট্রাম্পের কাছে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এটা এভাবে চলতে পারে না। সালটিভকা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরজুড়ে রাশিয়ার বোমাবর্ষণের ক্ষত রয়েছে।
২৩ বছর বয়সী একজন সরকারি কর্মচারী ওলেকসান্দ্রা ফ্রোলোভা বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইউক্রেন অন্য কারো ওপর নির্ভর করতে পারছে না। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ থামাতে পারবেন না। তিনি যাই প্রতিশ্রুতি দিন না কেন, ২৪ ঘন্টা, ৩০ দিন, ৬০ দিন বা ৯০ দিন। আমি মনে করি কেবল আমরাই সবকিছু পরিবর্তন করতে পারি।’
সূত্র : রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :