
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সরকারের দ্রুত বিদায় নেয়া দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ স্মরণকালে কেউ দেখিনি। পুলিশ প্রশাসনকে ঢালাওভাবে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা ও মামলা মোকদ্দমা দিয়ে নিস্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। পুলিশের মনোবল ফেরাতে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। পুলিশ প্রশাসনকে অকার্যকর করা হয়েছে। যেহেতু সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দেয়া। এই সরকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এই সরকার দেশকে আগুনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলার পরে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন। আজ বিকেলে কচুক্ষেত সংলগ্ন দ্যা বুফে প্যালেস এ এই ইফতার মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে।
হামলার পরে গণমাধ্যম কর্মীদের জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, এই সরকার নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করবে। আমাদের সাথে বৈষম্য করে এই সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শুধু মিছিল মিটিং নয়, এই সরকারের আমলে ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না। তারা নিজেদের লোক দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে। সেই দলকে ক্ষমতাসীন করার জন্য সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে। সরকারের সকল পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে নতুন দলটি। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সরকারের চলে যাওয়া উচিত, তারা দেশ চালাতে পারছে না। এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনও দিতে পারবে না। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কিছু লোক জ্ঞানী-গুনী। কিন্তু, তাদের দেশ চালানোর কোন অভিজ্ঞতা নাই। তাদের কোন প্রস্তাবনা বাস্তব সম্মত হবে না। এই সরকার দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে। ইসলামী উগ্রপন্থি এবং রক্ষণশীলদের এক করেছেন, আর উদারপন্থিদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে ভিন্ন মতালম্বীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই, মনে হচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে তারা একটি রাজনীতি করতে চাচ্ছে, তাতে দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে।
আজ বিকেল ৪টার দিকে দ্যা বুফে প্যালেস এ জাতীয় পার্টি নেতাকর্মী ও স্থানীয় গণমান্য রোজাদাররা উপস্থিত হন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ২০/২৫ জন এর একটি সন্ত্রাসী দল ইফতার মাহফিলের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করে। এসময় জাতীয় পার্টি নেতাকর্মী ও স্থানীয় রোজাদারদের প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা হল থেকে বের হয়ে যায়। এর প্রায় ১০ মিনিট পরে সন্ত্রাসী গ্রুপটি শতাধিক সন্ত্রাসীদের নিয়ে ক্রিকেট ব্যাট, হকিস্টিক, লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মী, স্থানীয় রোজাদার, সাংবাদিক ও পথচারী সহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এসময় সাংবাদিকদের মোটর সাইকেল সহ কমপক্ষে ২০টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। এসময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা পাওয়া যায়নি। ইফতারের আগ মুহুর্তে সেনাবাহিনী সদস্যরা এসে সন্ত্রাসীদের উপরে ব্যাপক লাঠিচার্জ চালিয়ে হটিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনীর দেয়া নিরাপত্তার চাদরে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর এর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খন্দকার দেলোয়ার জালালী
যুগ্ম মহাসচিব পদ মর্যাদায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর প্রেস সেক্রেটারি।
আপনার মতামত লিখুন :